যেদিন হতে হারিয়ে গেল যৌথ পরিবার,
ছিন্ন হলো যত স্বজন-
দাদা-দাদী চাচা-চাচী কত যে ছিল আপন আর।
বাড়িতো নয় মায়াপুরী – সামনে ছিল কাজল দিঘি,
দিঘির পাড়ে কাঁঠাল চাঁপা-
গন্ধে ভরা সারা বাড়ি,
মসজিদ থেকে সিন্নি হাতে -দাদার সাথে দাদীও এসে,
বলতো মধুর হাসি হেসে
কই গেলিরে লক্ষী সোনা আয় না -তাড়াতাড়ি।
চাচীর ছিল পাঁচটি মেয়ে
কত যে সাধ একটি ছেলে,
পাকা আমটি জমায়ে রেখে মিষ্টি কন্ঠে ডেকে ডেকে
-আমার হাতে দিতো তুলে।
হাসি-কান্নার মায়ার বাঁধন হারিয়ে গেল কই,
আমি এখন শহরের এক ছোট্ট ঘরে রই।
বড়হাড়িতে ভাত আর এক টেবিলে খাওয়া-
মিলেমিশে খেতাম সবাই গল্প ভরা মজা।
পান্তা ভাতে পোড়ামরিচ সাথে ডিমের ভাজা,
পোলাও কোরমা কাচ্চিতেও পাইনি সেই মজা।
বিকেল হলে পাড়ার সবাই খেলতাম মাঠে বল,
সুঠাম দেহ সুন্দর মনে কত যে ছিল বল।
আষাঢ় মাসে বনবাদাড়ে-
ঘুরতাম আরো হাওড় বিলে,
খালি গায়ে কদমের ফুল পাড়তাম আমরা সবাই মিলে,
ঘরের কোনে ডুমুর গাছে দোয়েল পাখির ছানা,
সন্ধ্যা হলে সবাই মিলে দিতাম তা’তে হানা।
ছেলে এখন ফ্লাটের কোনে সারাটাদিন বন্ধ রুমে
-ব্যস্ত শুধু নেট-মোবাইলে,
অজানা এক মিথ্যের পিছে।
কখন বিকেল কখন সকাল ধর্ম-কর্ম বুঝে না সে ।
রাত বারোটায় সন্ধ্যা তার দুপুর একটায় ভোর,
এ ভাবে সে হারাচ্ছে যে সোনালী রোদ্দুর।