সেদিন পাতারাও ছিল অবসরে।
একা শুধু আমার সঙ্গী হতে
সব পাতা সবুজে নিষাদ
রাতভর দিনভর নিয়েছিল ছুটি।
আমাকে উজাড় করে
সান্নিধ্যের সবটাই দিয়েছিল,
সবুজের দায়ভার , আকাশে মিলানো কিশলয়
নিশ্বাসের গভীরতম ছুঁয়ে থাকা অরণ্য আবাস
অকপটে হৃদয় ভরাতে এতটুকু কার্পণ্য করেনি।
জাগতিক যা কিছু – সব থেকে সবার থেকে
ফিরিয়ে নিয়েছিল চোখ। অযুত নিযুত চোখে
বিরামহীন দেখেছিল আমাকেই শুধু।
আমি অপলকে দেখেছি পত্রসম্ভার
অপার্থিব বিষ্ময়ে,
দেখেছি রৌদ্র ধোয়া নরম সবুজের উচ্ছ্বাস,
আনত সবুজ ছায়ায় একা বসে থাকা
বিষন্ন পাখি,
পাতার আড়ালে ভাবুক বুনো চাঁদ,
প্রমত্ত জলবতী মেঘ, কালবোশেখীর ঘনঘটা।
হেমন্তের নির্ঘুম পুরোটা রাত জেগে
কখনো পাতার শিরায় শিরায় লিখা
দূর্বোধ্য চিঠিগুলোর
অর্থ খুঁজে পেতে অক্লান্ত প্রার্থনায় মগ্ন থেকেছি।
ভেজা পাতা কি অসম অবলীলায় শিশুবেলার
টাপুর টুপুর বৃষ্টি দিনের কথা বলে।
বসন্তের ঝরা পাতা ঠান্ডা বাতাসের মত
স্মৃতিময় সুবাসে ভরে দেয় হৃদয়ের মাঠ।
পাতা ঝরে গেলে, শুকনো ঘাসে লুটায়
মন পোড়া অভিমান–,
দীর্ঘশ্বাস হয়ে ফেরে খোলা জানালায়
হঠাৎ বাতাসে।
পাতায় পাতায় রোদের নূপুর দেখব বলে
সব ছেড়ে এই অবেলায় খুব একা আমি,
সেদিন পাতারাও ছিল অবসরে
একা শুধু আমার সঙ্গী হতে
সব পাতা নিয়েছিল ছুটি।